SEO এর পূর্ণরূপ Search Engine Optimization কি?

 SEO এর পূর্ণরূপ Search Engine Optimization কি?



এসইও কি?

আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে যেখানে আপনি নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করেন, তাহলে আপনাকে SEO শব্দটির সাথে পরিচিত হতে হবে। কারণ, একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং তাতে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করাই শেষ কথা না। আপনার তৈরি করা কনটেন্টগুলো ভিজিটরদের কাছে পৌঁছাচ্ছে কি না, সেটা নিশ্চিত করাও অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

SEO এর পূর্ণরূপ Search Engine Optimization (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা কনটেন্টগুলো কোন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করা হলে তা যেন ভিজিটরের সামনে চলে আসে, সেই অনুযায়ী ওয়েবসাইট এবং ওয়েবসাইটের কনটেন্টকে অপটিমাইজ করার নামই SEOI মনে করুন, আপনি আপনার ওয়েবসাইটে Photo Editing সম্পর্কিত বিভিন্ন টিউটোরিয়াল প্রকাশ করেন। সুতরাং আপনি চাচ্ছেন, কেউ যদি গুগলে Photo Editing Tutorial লিখে সার্চ করে, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো তার সামনে আগে চলে আসবে এবং সেখান থেকে ওই ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবে।

এখানে চিন্তা করুন যে, শুধুমাত্র আপনিই Photo Editing সম্পর্কিত টিউটোরিয়াল প্রকাশ করেন না, আপনার মতো আরো অনেকেই আছে, যারা একই ধরনের টিউটোরিয়াল প্রকাশ করে। অথচ গুগল আপনার ওয়েবসাইটকেই কেন সার্চ রেজাল্টে সবার আগে দেখাবে? এর কারণ হচ্ছে, আপনি আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোকে গুগল সার্চে সবার আগে নিয়ে আসার জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করেছেন। আর এই কৌশলই হচ্ছে Search Engine Optimization বা SEO l

সুতরাং আমরা বুঝতে পারছি, SEO এমন একটি কৌশল বা নিয়ম যার ব্যবহার করে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোকে গুগলসহ যেকোন সার্চ ইঞ্জিনে ্যাঙ্ক করাতে পারি এবং আমাদের ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর নিয়ে আসতে পারি।

SEO প্রধানত প্রকারের হয়ে থাকে

On Page SEO: যে SEO ওয়েবসাইটের ভিতরে করা হয়ে থাকে, তাকে On Page SEO বলে। যেমন কনটেন্টের সাথে টাইটেল, ট্যাগ, কিওয়ার্ড ইত্যাদি প্রাসঙ্গিক আছে কি না, তা নিশ্চিত করা।

Off Page SEO: যে SEO ওয়েবসাইটের বাইরে করা হয়ে থাকে, তাকে On Page SEO বলে। যেমন বিভিন্ন ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয় বা ফোরামে ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করা। অথবা ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করা ইত্যাদি।

 

SEO কেন করবো?

প্রথমেই উল্লেখ করেছিলাম, একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং তাতে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করাই শেষ কথা না। তৈরি করা কনটেন্টগুলো ভিজিটরদের কাছে পৌঁছাচ্ছে কি না, সেটা নিশ্চিত করাও অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সুতরাং আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো যেন গুগলে সার্চ করে সবার আগে ভিজিটরের কাছে পৌঁছায়, তার জন্য আপনার ওয়েবসাইটকে অপটিমাইজ করা অপরিহার্য।

এটা মনে রাখতে হবে যে, আপনি যদি ওয়েবসাইটকে SEO না করেন, তাহলে আপনার কনটেন্টগুলো সার্চ ইঞ্জিনে তৃতীয় অথবা চতুর্থ পেজে দেখাবে। হয়তো দেখাবেই না। আর খুব সংখ্যক মানুষই আছেন, যারা গুগলে কোন তথ্য সার্চ করে দ্বিতীয় পেজে যান। অর্থাৎ, বেশিরভাগ ভিজিটরই ওই ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশ করবে, যেগুলো সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে প্রদর্শিত হয়েছে। আর যেহেতু আপনার ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে প্রদর্শিত হচ্ছে না, ফলে আপনি সম্ভাব্য প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর হারাবেন।

সুতরাং বর্তমান প্রতিযোগিতার বিশ্বে SEO ছাড়া সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর বা ট্রাফিক পাওয়া প্রায় অসম্ভব। সাধারণত SEO ছাড়া কোনো ওয়েবসাইটকেই সার্চ ইঞ্জিন ্যাঙ্কই করে না।

SEO' সম্ভাবনা ভবিষ্যত কেমন?

আমাদের দেশে বর্তমানে বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে অনেকেই বসে আছেন কাজের সন্ধানে কিংবা একটি চাকরির জন্য। তবে তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে SEO জানলে বসে থাকার কোনো কারণ নেই। শুধু SEO- নয়, প্রযুক্তিগত যেকোনো সেক্টরে দক্ষতা থাকলে লোকাল মার্কেটে আপনি অনেক কাজ খুঁজে পাবেন। আর অনলাইন মার্কেটপ্লেস তো আছেই।

আর ওয়েব ডেভেলপারদের ক্ষেত্র SEO এর বিস্তর জ্ঞান থাকাটা অতীব জরুরী। কারণ, SEO সম্পর্কে জ্ঞান নেই, এমন ওয়েব ডেভেলপারকে কখনোই একজন পরিপূর্ণ ডেভেলপার বলা যায় না।

প্রতিনিয়ত আমাদের দেশে হাজার হাজার ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। আর তাই SEO এর চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিনিয়ত। বিশ্ব বাজারে SEO এখন বিলিয়ন ডলার মার্কেটে রূপ নিয়েছে। আর বাংলাদেশেও অদূর ভবিষ্যতে SEO হবে একটা বিশাল কর্মসংস্থানের জায়গা। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এই কাজে নিয়োজিত রয়েছেন লাখ লাখ ফ্রিল্যান্সার এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সারই SEO এর কাজ করে থাকেন। অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে SEO' যে পরিমাণ প্রজেক্ট কিংবা কাজ রয়েছে তা মোট প্রজেক্ট কিংবা কাজের প্রায় অর্ধেক হবে।

সুতরাং বলা যেতে পারে দেশে কিংবা বিশ্ব বাজারে SEO' সম্ভাবনা অফুরন্ত এবং SEO এক্সপার্টদের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। তাই SEO তে সফলতা অর্জন করতে হলে আপনার প্রয়োজন লেগে থাকার মানুসিকতা এবং কঠোর পরিশ্রম। পরিশ্রম মানেই কঠিন কিছু নয়। যেকোন স্কিল শিখার ক্ষেত্রে মন দিয়ে লেগে থাকলে সফলতা আসবেই

 

ব্যাকলিংক (Backlink) কী?

আমরা যখন কোন ওয়েবসাইটকে গুগলে ্যাঙ্ক করাতে চাই, তখন স্বভাবতই অন্যান্য বিষয়ের সাথে ব্যাকলিংক কথাটি চলে আসে। কি এই ব্যাকলিংক? এটা কেন ব্যবহার করতে হয়? এটার কীভাবে কাজ করে? আর এই ব্যাকলিংক আমরা কীভাবে তৈরি করতে পারি?

ব্যাকলিংক হচ্ছে একটি এক্সটারনাল লিংক (External Link) যা অন্য একটি ওয়েবসাইট থেকে আপনি আপনার সাইটে পেয়ে থাকেন। আরো সহজভাবে বললে, যখন অন্য কেউ তাদের ওয়েবসাইটের কোন এক কনটেন্টে আপনার সাইটের লিংক প্রকাশ করে, তখন তাকে ব্যাকলিংক বলে। একটা উদাহরণ দিচ্ছি।

মনে করুন আপনার একটি ওয়েব সাইট আছে এবং সেই সাইটের লিংকটি আপনি অন্য একটি সাইটে রাখলেন। অথবা অন্য কেউ আপনার সাইটের লিংকটি তার ওয়েবসাইটে ভিজিটরদের ভিজিট করার জন্য দিল। তাহলে যে সাইটে আপনার সাইটের লিংক প্রকাশ করা হলো, সেই সাইটে আপনি আপনার সাইটের জন্য একটি ব্যাকলিংক পাবেন।

ব্যাকলিংক হচ্ছে নিজের সাইটের লিংক অন্য কোন সাইটে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাবমিট করা এবং সেই লিংকের মাধ্যমে ওই সাইটের ভিজিটরদের আপনার সাইটে নিয়ে আসা। এটা সরাসরি হতে পারে, পরোক্ষভাবে হতে পারে কিংবা উভয় পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতেও হতে পারে।

যেমন আপনি যদি কোন সাইটের নির্দিষ্ট একটি কনটেন্টে নিজের মতামত প্রকাশ করে তার সাথে আপনার সাইটের লিংকটিও সংযুক্ত করে দেন এবং ওই সাইটের এডমিন যদি কমেন্টটি এ্যাপ্রুভ করে, তাহলে আপনি একটি ব্যাকলিংক পেয়ে গেলেন। আবার আপনি সরাসরি কোন ওয়েবসাইটের এডমিনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, যেন তারা তাদের পরবর্তী কোন কনটেন্টে আপনার সাইটকে উল্লেখ করে।

কেন ব্যাকলিংক ব্যবহার করবো?

একটি সাইটের গুরুত্ব গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে ব্যাকলিংক বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটকে গুগল সার্চে শীর্ষে নিয়ে যেতে চান, তাহলে আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ) করতে হবে। আর অফ পেজ এসইও এর ধাপগুলোর মধ্যে লিংক বিল্ডং বা ব্যাকলিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একটি ব্যাকলিংক মানে, আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোর প্রতি একটি সমর্থন। আর ১০০ টি ব্যাকলিংক মানে আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোর প্রতি ১০০ টি সমর্থন। অর্থাৎ আপনার সাইটের যত ব্যাকলিংক রয়েছে, কনটেন্টগুলোর গ্রহণযোগ্যতাও তত বেশি।

আমরা যে কোন তথ্য জানার জন্য গুগলে সার্চ করি। গুগল সার্চে ওই সকল ওয়েবসাইটগুলোই শীর্ষে অবস্থান করে যাদের ব্যাকলিংক বেশি। কারণ গুগল কখনোই চাইবে না, যে সাইটগুলোর জনসমর্থন নেই, সেই সাইটগুলো আপনার সামনে এনে দিক। আর এই গুগল সার্চ ইঞ্জিনের কাছে ব্যাকলিংক তৈরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সুতরাং যদি প্রতিনিয়ত আপনার সাইটের ব্যাকলিংক বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন সার্চ ইঞ্জিন আপনার সাইটকে গুরুত্ব বেশী দেবে এবং ্যাংক প্রদান করবে।

ব্যাকলিংক কি ভিজিটর বাড়াতে সাহায্য করে?

অব্যশই। ব্যাকলিংক যেভাবে আপনার সাইটকে গুগল ্যাংক পেতে সাহায্য করে, ঠিক ভিজিটর বাড়াতেও সাহায্য করে। যখন কোন ওয়েবসাইটের কনটেন্ট বা পোস্টে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক করানো থাকে, তখন ওই ওয়েবসাইট থেকে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসার সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

আমরা কীভাবে ব্যাকলিংক পেতে পারি?

কোন সাইটের কোন কনটেন্টে বা মন্তব্যে বা অন্য কোথাও যদি আপনার সাইটের লিংক দেয়া থাকে তাহলে সেটা আপনার সাইটের জন্য ব্যাকলিংক হিসেবে ধরে নেয়া হবে। যদিও এসইও' ক্ষেত্রে এটি একটি পুরোনো পদ্ধতি। যা বর্তমানে এড়িয়ে চলতে বলা হয়ে থাকে। এমন অনেক ফোরাম আছে যেখানে কেউ তার মতামত ব্যক্ত করার সময়ে যদি আপনার সাইটের লিংক উল্লেখ করে তাহলে আপনি একটি ব্যাকলিংক পাবেন। আপনি আরো অনেক ভাবেই ব্যাকলিংক পেতে পারেন। যেমন:

·         কোন ব্লগসাইটে গেস্ট ব্লগার হিসেবে আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে

·         ফোরাম টিউনিং এর মাধ্যমে

·         কোন ব্লগে মন্তব্য করার মাধ্যমে

·         কোন ফোরামে মন্তব্যের করার মাধ্যমে

ব্যাকলিংক পাওয়ার এই পদ্ধতিগুলো সার্চ ইঞ্জিন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তবে এর বাইরেও আপনি অন্যান্য উপায়ে ব্যাকলিংক পেতে পারেন। যেমন কোন ওয়েবসাইটের সাথে লিংক এক্সচেঞ্জ। অর্থাৎ অন্য সাইট এডমিনের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে। বিভিন্ন সাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আপনি ব্যাকলিংক সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে ব্যাকলিংক কিনতেও পারেন।

যেকোন সাইট থেকে পাওয়া ব্যাকলিংক কি সমান গুরুত্বপূর্ণ?

একদমই না। আপনাকে ব্যাকলিংক দেবে, এরকম শতশত সাইট হয়তো আপনি পাবেন। কিন্তু গুগলে আপনার সাইট ্যাঙ্ক পাওয়ার জন্য সব ব্যাকলিংকই একই রকমের গুরুত্বপূর্ণ না। আপনাকে সব সময় ওই সকল সাইট থেকেই ব্যাকলিংক নেয়ার চেষ্টা করতে হবে, যাদের নিজেদের ্যাঙ্কিং ভালো।

গুগলে ওয়েবসাইট ্যাঙ্কিং

বর্তমান এই প্রতিযোগিতামূলক অনলাইন দুনিয়ায় সবাই চায় তার ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিনে শীর্ষে থাকুক। কিন্তু হতাশার কথা হচ্ছে খুব কম সংখ্যক মানুষই তা পেরে থাকে। আপনার ওয়েবসাইটে ভালো কনটেন্ট থাকলেই তা বেশি ট্রাফিক পাবে বা গুগলে ্যাঙ্ক করবে, এমনটা ভাবা ভুল। একটি ওয়েবসাইটের কনটেন্ট সার্চ ইঞ্জিনে ্যাঙ্ক করবে কি না, তা নির্ভর করে সম্পূর্ণরূপে এসইওর ওপরে। আর বেশির ভাগ ওয়েবসাইটই এই পরীক্ষাটিতে উত্তীর্ণ হতে পারেন না। ফলে প্রত্যাশিত ভিজিটর না পেয়ে ক্রমাগত হতাশায় ভোগেন।

গুগলে ওয়েবসাইট ্যাঙ্কি করাটা খুব সহজ কোন কাজ না। এর জন্য আপনাকে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যেতে হবে এবং আগ্রহ বজায় রাখতে হবে। চলুন, ১০ টি টিপস জানি, যা দিয়ে আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে গুগলে ্যাঙ্কিং এর চেষ্টা করতে পারেন।

. ভালো প্রয়োজনীয় কনটেন্ট আপলোড করা: আপনি আপনার ওয়েবসাইটে হয়তো প্রতিদিন কিছু না কিছু আপলোড করছেন। কিন্তু আপনকে মনে রাখতে হবে, এই কনটেন্টগুলো যেন যা-তা না হয়ে যায়। অর্থাৎ ভিজিটরের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে অত্যান্ত সুন্দর সু-শৃঙ্খল কনটেন্ট আপলোড করা উচিত৷ সময় বিশেষে ট্রেন্ড অনুসরণ করা উচিত এবং ভিজিটররা কোন জাতীয় কনটেন্ট চায় তার প্রতি ভালো জ্ঞান রাখা জরুরী।

প্রয়োজনীয় বিষয়টি নির্বচন করে আপার কনটেন্টগুলোকে খুব সুন্দরভাবে সাজান। যদি আপনার ওয়েবসাইটটি ব্লগ ভিত্তিক হয়ে থাকে, তাহলে আপনার লেখাগুলোকে আরো বেশি তথ্যবহুল করে তুলুন। একটা কথা মনে রাখুন, গুগল দীর্ঘ এবং তথ্যবহুল কনটেন্ট পছন্দ করে। আপনার কনটেন্ট যত বেশি তথ্যবহুল থাকবে, একজন ভিচজিটরের আপনার সাইটের প্রতি তত বেশি আগ্রহ বাড়বে। ফলে খুব সম্ভাবনা বেড়ে যায়, এর পর উক্ত ভিজিটর এরপর থেকে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ না করে সরাসরি আপনার ওয়েব এড্রেস লিখে আপনার সাইট ভিজিট করার।

. আর্টিকেলের জন্য ভালো Title Tag বাছাই করুন: ব্লগ জাতীয় ওয়েবসাইট এসইও করার ক্ষেত্রে আর্টিকেলের সবচেয়ে জরুরি অংশ হলো Title বা শিরোনাম। আর্টিকেলের জন্য ভালো Title Tag নির্বাচন করা অন পেজ এসইও' অন্তর্ভুক্ত। যদি আপনি আপনার আর্টিকেলের জন্য ভালো Title Tag ব্যবহার করেন, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর প্রথমেই আপনার ওয়েবসাইটের লিংকে ক্লিক করবে।

আর সার্চ ইঞ্জিন হোক বা সোশ্যাল মিডিয়া, আপনার আর্টিকেলের Title দেখেই পাঠক আকর্ষিত হবে এবং পুরো আর্টিকেল পড়বে। সুতরাং এমন Title লিখুন যেটা খুব সহজে বুঝা যায় বা যেটা পরেই পুরো আর্টিকেলের বিষয়টি বুঝা যায়। তাহলে Google Search Result থেকে হোক বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে, আপনার ব্লগের সেই লিংকে সবাই ক্লিক করবে। আর একটা কথা মনে রাখুন, যদি Google Search Result বেশিভাগ লোক আপনার ব্লগের লিংকে ক্লিক করে, তাহলে আপনার ব্লগের CTR – Click Through Rate ভালো হয়। যা ওয়েবসাইটকে গুগলে জনপ্রিয় করতে আরো সাহায্য করে।

গুগল সার্চ থেকে আপনার ব্লগে বেশি ক্লিক হওয়া বা CTR ভালো হওয়া মানে আপনার ব্লগের প্রতি গুগলের নজরে ভালো হওয়া। কারণ, আপনার আর্টিকেল লিংকে বেশিভাগ ক্লিক হওয়া মানে ভিজিটর রা আপনার আর্টিকেলে তথ্য পরে ভালো পেয়েছেন এবং এতে গুগল আর্টিকেলগুলোই আগে দেখাবে।

. Tag ব্যবহারে আরো যত্নবান হবেন: কনটেন্ট আপলোডের পূর্বে অবশ্যই আপনার কনটেন্ট রিলেটেড কিছু Tag যুক্ত করুন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অনেকে Tag অপশনটি খালি রাখেন। এটা চূড়ান্ত একটি ভুল কাজ। গুগল আপনার কনটেন্টগুলো Tag দেখেই খুঁজে বের করবে। আর আপনি যদি কোন Tag ব্যবহার না করেন, সেক্ষেত্র গুগল সার্চের প্রথম পেজে কখনোই স্থান দখল করতে পারবেন না।

তাই চেষ্টা করুন, আপনি যে বিষয়ের ওপর কনটেন্ট লিখেছে, তার সাথে সম্পর্কযুক্ত Tag যোগ করে দিতে। অর্থাৎ, সার্চ ইঞ্জিনে কি কি লিখলে আপনার কনটেন্টগুলো চলে আসবে, চেষ্টা করুন সেই জাতীয় Tag তৈরি করতে।

. ওয়েবসাইটের লোডিং স্পীড দ্রুত করুন: ওয়েবসাইট এসইও করার ক্ষেত্রে যেকোন ওয়েবসাইটের লোডিং স্পীড অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি এমন কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন, যার পেজগুলো লোডিং হতে অনেক বেশি সময় নেয়, তাহলে নিশ্চয়ই আপনি ওই ওয়েবসাইটকে পছন্দ করবেন না। ঠিক একই ভাবে কোন ভিজিটর তথ্য সংগ্রহের জন্য আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে লোডিং স্পীড যদি কম পায়, তাহলে সে বিরক্ত হয়ে অন্য ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবে। তাই চেষ্টা করুন সবোচ্চ সেকেন্ডের মধ্যে আপনার ওয়েবসাইটকে লোড করার। এর ফলে আপনার কোন ভিজিটর যিনি আপনার ব্লগে আর্টিকেল পড়তে এসেছেন, তা খুব তাড়াতাড়ি দেখতে বা পড়তে পারেন। পক্ষান্তরে, পেজ ধীর গতিতে লোড হওয়ার দরুণ ভিজিটর যদি আপনার সাইট থেকে চলে যায়, তাহলে তা Google Search বা অন্য সার্চ ইঞ্জিনের কাছে আপনার ব্লগের খারাপ ইমেজ তৈরী হয়। আর, ধীর গতির ওয়েবসাইট হওয়ার জন্য সার্চ ইঞ্জিন আপনার ওয়েবসাইট প্রথম স্থানে না রেখে তাকে পিছাতে থাকে এবং ওই সকল ওয়েবসাইটকে সামনে নিয়ে আসে যাদের লোডিং স্পীড তুলনামূলক দ্রুত।

. ব্লগ পোস্টের লিংক কাস্টমাইজ করুন: আপনার ওয়েবসাইট নতুন কোন বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লেখার শুরুতে আগে ভেবে নিন লিংক কেমন হবে। অনেকেই লিংকের এই বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না। ফলে কাঙ্খিত ফলাফল থেকে বঞ্চিত হয়। আপনার ব্লগ পোস্টের লিংক কেমন হবে, তা আপনি খুব সহজেই নির্বাচন করতে পারেন। আপনি ব্লগস্পট ব্যবহার করেন অথবা ওয়ার্ডপ্রেস, আপনি এই দুটি প্লাটফর্ম থেকেই আর্টিকেলের URL address সেট করে নিতে পারবেন।

ব্লগ আর্টিকেলের URL address সবসময় রিলেটেড keyword ব্যবহার করুন। এছাড়া সব সময় চেষ্টা করুর URL address টিকে ছোট রাখার। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, আপনার লেখা আর্টিকেল যদি এমন হয় যে, “SEO কি এবং ব্লগে এর ব্যবহার কিভাবে করবো করবোতাহলে আপনি আর্টিকেলের URL address সেট করুন এভাবে: “Seo-মানে-কিঅথবাএসইও-কি-এবং-এর ব্যবহার

এভাবে ছোট পরিষ্কার URL address এবং তাতে keyword ব্যবহার করলে Google সহজে বুঝতে পারে যে আপনি কিসের ওপরে আর্টিকেল লিখেছেন। এতে আপনার লেখা আর্টিকেল Google সার্চে ভালো ভাবে Rank করার সুযোগ থাকে।

. যথেষ্ট পরিমাণে Internal linking করুন: ইন্টারনাল লিংকিং অন পেজ এইসইও এর অন্তর্ভুক্ত। অনেকেই হয়তো Internal linking এর বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি জানেন না। Internal linking হলো আপনার ব্লগের একটি পোস্টের মধ্যে অন্য একটি পোস্টের লিংক উল্লেখ করা। যেমন আমি যদি লিখি: কিভাবে শিখবেন গ্রাফিক্স ডিজাইন, তা পড়ে আসুন এখান থেকে। তাহলে এটা একটি Internal linking |

একটি ভালো Internal linking এর concept আপনার ব্লগের আর্টিকেল Google সার্চে ্যাঙ্ক করতে অনেক সহায়তা করে। পাশাপাশি আপনার ওয়েবসাইটের অন্যান্য পেজগুলোর ভিজিটরের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

. ALT Tag এর যথাযথ ব্যবহার করুন: রিলেটেড ট্যাগ অপশনের মতোই ALT Tag ট্যাগও অনেক ব্লগারের কাছেই অবহেলিত একটি অপশন। অথচ এই অপশনগুলো দেয়াই হয়ে থাকে আপনার কনটেন্টকে এসইও উপযোগী তৈরি করতে। আপনি যখন আপনার ওয়েবসাইটে কোন আর্টিকেল লেখেন, তখন নিশ্চয়ই তার সাথে বেশ কিছু ইমেজ বা ছবি ব্যবহার করেন।

যখন ব্লগে ছবি আপলোড করবেন তখন “Alt tag” নামে একটি অপশন পাবেন। সেটির যথাযথ ব্যবহার করুন। Alt tag অপশনে ওই ছবিটি ব্যতিক্রম আর কি কি কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করলে পাওয়া যাবে, তা সংক্ষেপে লিখুন। ALT Tag থাকলে Google এবং অন্য সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারে যে আপনার আপলোড করা ছবিটি কিসের সাথে সম্পর্কিত। তাই ALT Tag অবশ্যই ব্যবহার করবেন এবং ALT Tag keyword এর ব্যবহার রাখবেন।

. ফ্রি অথবা প্রিমিয়াম প্লাগিন ব্যবহার করুন: বর্তমানে অনেক প্লাগিন আছে, যেগুলো আপনার কনটেন্ট এসইও ফ্রেন্ডলি কি না তা দেখিয়ে দেবে। ধরনের প্লাগিনগুলো ফ্রি অথবা প্রিমিয়াম দুটি ক্যাটাগরিতেই পাওয়া যায়। এদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি প্লাগিন হচ্ছে ইয়োস্ট এসইও (Yoast Seo) Yoast Seo এর মাধ্যমে আপনি এসইও ফ্রেন্ডলি টাইটেল নির্বাচন করতে পারবেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার কনটেন্ট শেয়ার করলে তার কি ডিসক্রিপশন (বর্ণনা) প্রদর্শন করবে, তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মোটামুটি সুবিধাগুলো আপনি Yoast Seo এর ফ্রি ভার্সনেই পাবেন। এর থেকে বেশি কার্যকরী সুবিধা পেতে আপনাকে প্রিমিয়াম ভার্সনে আপগ্রেড করতে হবে।

. অন্যের ওয়েবাসাইটে গেস্ট হিসেবে লিখুন এবং ব্যাকলিংক নিন: এটা এখন সর্বজন স্বীকৃত যে, ওয়েবসাইট এসইও করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে যে বিষয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে ব্যাকলিংক। গুগল তার সার্চে টপে নিয়ে আসার জন্য ওই সকল ওয়েবসাইটকে খোঁজে, যার ব্যাকলিংক তুলনামূলক বেশি। তাই আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য প্রচুর পরিমাণে ব্যাকলিংক বিল্ড করতে হবে।

জন্য আপনি পরিচিত অন্য কারো ওয়েবসাইটে গেস্ট ব্লগার বা অতিথী লেখক হিসেবে লিখতে পারেন। এর ফলে আপনি সুযোগ পাবেন, আপনার ওয়েবসাইটের লিংকগুলো তাদের ওয়েবসাইটে শেয়ার করার। এভাবে আপনি যত বেশি ব্যাকলিংক বিল্ড করতে পারবেন, আপনার ওয়েবসাইটের DA অর্থাৎ Domain

আপনি ইচ্ছে করলেই কোর্সটিকা ব্লগে একজন গেস্ট ব্লগার হিসেবে লিখতে পারেন এবং আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারেন। কোর্সটিকা ব্লগে লিখতে চাইলে আপনার লেখাগুলো পাঠিয়ে দিন mail@courstika.com এই ঠিকানায়।

Authority তত বেশি বাড়িয়ে নিতে পারবেন। ফলে আপনার ব্লগ গুগল সার্চে শীর্ষ ১০ result দেখানোর সুযোগ থাকবে।

১০. নিজেকে আপডেট রাখা: সবশেষ পরামর্শ হচ্ছে নিজেকে নিয়মিত আপডেট রাখতে হবে। হতে পারে আপনি এসইও সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই জানেন। তবে আপনি যদি সেই ২০১১ কিংবা ২০১৪ সালের এসইও পদ্ধতিগুলো জেনে বসে থাকেন এবং সেগুলোই এখনও প্রয়োগ করেন, তাহলে এখন আপনি কোনভাবেই সেই আগের পদ্ধতিগুলো দিয়ে ওয়েবসাইট ্যাঙ্ক করাতে পারবেন না। সার্চ ইঞ্জিনের অপটিমাইজেশন পদ্ধতি প্রতিনিয়তই আপডেট হচ্ছে। আর তার সাথে সাথে ক্রমাগত বদলে যাচ্ছে এসইও করার পূর্বের টেকনিকগুলো। তাই ভালো ফলাফল পেতে বর্তমান সময় প্রযুক্তির সাথে নিজেকে আপডেট করে নিতে হবে। বর্তমান সময়ে পুরোনো ধ্যান-ধারণা কখনোই আপনাকে একটি ওয়েবসাইট ্যাঙ্ক করাতে সফল করবে না।

 

লেখকের কিছু কথা

ওয়েব ডেভেলপমেন্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হচ্ছে এসইও। অনেক শিক্ষার্থী আছেন, যারা অপেক্ষায় আছেন একটু ভালো দিক-নির্দেশনার। হয়তো যথাযথ কোন দিক-নির্দেশনা বা গাইডলাইন পেলে তারা তাদের মেধাকে প্রকাশ করতে পারে। প্রয়াশ মূলত বেসিক লেভেলের শিক্ষার্থীদের জন্য, যারা এসইও সম্পর্কে কেবল জানতে শুরু করেছে। আমি শুধুমাত্র গুগলের দুইটি প্রোডাক্ট যথাক্রমে Google Analytic এবং Google Search Console সম্পর্কে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। এসইও অনেক বিস্তর এবং দীর্ঘমেয়াদী ধারণা। বলা হয়ে থাকে এসইও এর কোন শেষ নেই। যত সময় যায়, এসইও এর নতুন নতুন কনসেপ্ট চলে আসে। কিন্তু একজন বেসিক লার্নার হিসেবে আপনি যদি শুধু Google Analytic এবং Google Search Console সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন, এটি আপনার ওয়েবসাইটকে এতটা সফলতা দেবে, যা সত্যিকার অর্থেই অকল্পনীয়।

 Read More

কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের পরিচিতি


RAM এবং ROM এর মধ্যে পার্থক্য কি?


HDD এবং SSD কি?


কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং কিকেনকিভাবে?


কন্টেন্ট রাইটিং কিকেন এত গুরুত্বপূর্ণ? (বিস্তারিত জানুন)


পিএইচপি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তরঃ

SEO এর পূর্ণরূপ Search Engine Optimization কি?

Google Analytics

Google Search Console

সাইটম্যাপ (Sitemap)

এসইওর কিছু ভুল প্রাকটিস


No comments

Powered by Blogger.